উত্তম পুরকাইত
জানি বয়স বাড়ছে। নিজের হাতে লাগানো শাল, সেগুন, এমন কি বকুল তাও এখন বৃক্ষ। একমাত্র মেয়ে সৌমির পাশে দাঁড়ালে এখন পাকা দু ইঞ্চি ছোট দেখায় নিজেকে। এখনি পাঁচ ফুট ছয়। ওর এই তরতর করে বড়ো হওয়া আমি বেশ উপভোগ করি। কতটা বড়ো হবে সৌমি ? হবে কি ওর দাদুর মতো ছ ফুট ?
খুবই বিস্ময়কর ও একটা জটিল প্রবাহ আমাদের চোখের আড়ালে নিয়ত ঘটে চলেছে। অনিমেষ চোখে তাকিয়ে থাকলেও ফুলের পাপড়ি কীভাবে খোলে, রঙ কীভাবে বদলায় কিছুতেই টের পাওয়া যায় না।
শুধু প্রকৃতিতে নয়, আমাদের নিজেদের দেহের মধ্যেও এই অদৃশ্য ক্রিয়া চলেছে। অথচ দেখার উপায় নেই। ডুমুরের ফুল বা সাপের পাঁচ পা না দেখার জন্য আমরা আফসোস করি। আমাদের নিজেদের দৈনিক ব্যবহৃত শরীরটা কোথায় কিভাবে বাড়ছে, বদলে যাচ্ছে তাও তো দেখতে পাই না। শুধু হৃদ-স্পন্দন আর রক্ত মাংসের একটা প্রবাহ টের পাই বুকে হাত দিলে কিংবা কেটে-কুটে গেলে।
অন্যের বেড়ে ওঠা যদিও বা নজরে পড়ে নিজেদের বাড়-বৃদ্ধি বোঝা বড়ো দায়। ছেলেবেলায় কপাটের ফ্রেমে দাঁড়িয়ে নিজের উচ্চতা দাগিয়ে প্রায় প্রতিদিন একবার করে দাঁড়িয়ে দেখতাম। তারপর কখন কীভাবে বড়ো হলাম মনে নেই। কিন্তু কপাটের ফ্রেমে দাগানো চিহ্ন এখনও আছে।
আসলে পঁচিশ-ত্রিশ পার হলে চেহারার বাড়-বৃদ্ধি বোঝা বড়ো দায়। তখন কে পঁচিশ, কে চল্লিশ! পাক্কা ছ বছরের ছোট প্রদীপকে আমিই কতদিন না জেনে দাদা বলে সম্বধন করেছি। প্রদীপও না জেনে ভাই বলে ডেকেছে। তবে চেহারায় একটা ছাপ যে পড়ে তা আয়নার সামনে দাঁড়ালেই বোঝা যায়।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ত্বকে কোথাও ভাঁজ বা একটা পাকা চুল দেখলে মন খারাপ হয় না এমন মানুষ দেখিনি। কীভাবে ভাঁজ পড়ল, চুলে পাক ধরল সে এক জটিল রহস্যময় ব্যাপার। ডাক্তাররা হয়তো বলবেন অনেক কিছু, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হরমোনের পরিবর্তন, নানা প্রকারের মাত্রার হেরফের আরও কত কি। কিন্তু কেন হয় ? কীভাবে হয় ? কিছু কি তার চোখে পড়ে ?
পাঠক এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবতে শুরু করেছেন গল্পকারের হাতে কোনও গল্প নেই। তাই এলোমেলো ভাবনায় বুঝি গল্প খোঁজ করার ধান্ধা করছি। ব্যাপারটা অনেকটা তাই। তবে কি জানেন, রামায়ণ, মহাভারত কিংবা পুরাণের যুগে এসব চিন্তার এক আশ্চর্য সরল সমাধান ছিল। বাস্তব-অবাস্তবের ধারণা তো আমাদের বেশি দিনের নয়। তখন যা কিছু বিশ্বাস্য তাই বাস্তব। তাই বাস্তবিক না হলেও সমাধান বিশ্বাসে ছিল, কাহিনিতে ছিল।
জ্বরা-ব্যাধি বহনে অক্ষম বৃদ্ধ পিতা পুত্রের কাছে যৌবন চেয়ে বসলেন। বিশ্বাস মতে পিতা-মাতাই দেবতা। তাই পিতৃভক্তিতে গদ গদ পুত্র পিতাকে যৌবন দান করে কিছু দিন পিতার বার্ধক্যের বোঝা কাঁধে নিয়ে নিল। না, কেউ প্রশ্ন করেনি নেওয়া গিয়েছিল কিনা। সম্ভব অসম্ভবের মাঝে কল্পনার মাপকাঠি ছিল অনেক বড়ো। অভাব ছিল বেশি কিন্তু অভাববোধ ছিল নগণ্য। তাছাড়া পরলোকে বিশ্বাস থাকায় ইহলোকের দুঃখ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যেত।
কিংবা বাতাসে সুন্দরী যুবতীর শুভ্র বসন উড়ল, সে নগ্ন সৌন্দর্য দেখে দুই বৃদ্ধ ঋষি কামুক হয়ে যুবতীর কাছে আলিঙ্গন চেয়ে বসলেন। যুবতী প্রত্যাখ্যান করল। জানাল তার স্বামী বর্তমান। স্বামী যদিও বৃদ্ধ তবু বৃদ্ধ হলেও সে তার প্রতিই অনুরক্ত। অন্য কোনও পুরুষে তার আসক্তি নেই। যুবতীর এই পতি প্রেমে সন্তুষ্ট হয়ে দুই ঋষি যুবতীর বৃদ্ধ স্বামীকে এক সরোবরে নিয়ে গেলেন। আশ্চর্য্য সেখানে ডুব দিতেই সরোবর থেকে উঠে এলেন হুবহু একই রকম দেখতে তিনটি যুবক। যুবতী প্রথমত একটু থতমত খেলেও পরে ঠিক চিনে নিল নিজের স্বামীকে। বিশ্বাসের কাছে বয়সের হেরাফেরা হেরে গেল। কেউ প্রশ্ন করল না ঠিক কীভাবে যুবতী তার স্বামীকে চিনল, এভাবে চেনা সম্ভব কিনা ?
আহা ! এমন যদি এযুগে হতো তাহলে বয়সের বাড়া কমা নিয়ে কে আর এত মাথা ঘামাত বলুন। তাহলে সৌমির পিছন পিছন ঘুরে বেড়ানো ছেলেটিকেই আমি প্রস্তাব দিতাম, সৌমিকে পেতে হলে তোমার যৌবন যৌতুক স্বরূপ কিছুদিন বাঁধা রাখো তো বাপু। হয়তো রাখতো না, অন্য মেয়ের পিছু নিতে ছুটত। তবু বলা তো যেত।
আর তখন প্রশ্নই বা কে করত পঁচিশে পা দেওয়া বিশাখাকে আমি আদৌ ভালবাসতে পারি কিনা ? অথবা বিশাখা আমাকে ? ভয়ই বা কে পেত, বিশাখাকে আমার মনোভাবের কথা জানাব কি জানাব না তা নিয়ে ! উচিত অনুচিত না হয় ছেড়েই দিলাম।
ভাবতে ভাবতে চাঁদ ঢলে পড়ে পশ্চিমে। সূর্যের চড়া রোদে রাতের ভিজে রোমান্স শুকনো কাঠ। ধানের বুকের দুধ গাঢ় হলে ভোরের শিশিরে কিংবা সূর্যাস্তে তার ঢলে পড়া স্বাভাবিক।
দুই
উদবেগ, উৎকণ্ঠা দিন দিন বাড়ছে। আর একটু পরেই আসবে বিশাখার ফোন। মনে করিয়ে দেবে সারাদিন আমার কোথায় কি কাজ। গত ছমাস হল ও আমাকে অ্যাসিস্ট করছে। আমাদের মতো মাঝারি মাপের কোম্পানিতে এমন ঝকঝকে মেয়ে আগে কখনও দেখিনি। সপ্রতিভ চোখ মুখ দেখেই বুঝেছিলাম। কাজে তার চমৎকার প্রমাণ পাচ্ছি। কাজ করতে করতে এখন আমরা বন্ধুর মতোই ঘনিষ্ট হয়ে পড়েছি। আবেগ লুকানোর ছদ্মবেশ বড়ো একটা নেই। হঠাৎ কোনও ফাইল খুঁজে না পেলে ও খুঁজে দেয়, শাসনও করে। মাঝে মাঝে মনে হয়, হয় ওর বছর পনেরো আগে জন্মানো উচিত ছিল নয় আমার বছর দশ-বারো পরে জন্মানো উচিত ছিল। ওকে নিয়েই যত উদ্বেগ।
কাজের ফাঁকে এখন আমরা দুজনেই উচ্ছ্বাস দেখাই। একসঙ্গে চা, ডিনার, এমনকি হুইস্কিও চলে। তবু অলিখিত বিধি একটা থেকেই যায়। সে বিধি ওর জন্য যতটা, ততোধিক আমার জন্য। যতই বেশি উচ্ছ্বাস দেখাক পঁচিশের বিশাখা, ওর কোমল হাত ছুঁয়ে যাক হাত, কাঁধে মাথা রাখুক কখনো-সখনো, জোর করে হলেও আমাকে মনে রাখতে হয় আমি পঁয়তাল্লিশ। প্রয়োজনে একশো আশি ডিগ্রী ঘুরে কথা বলতে হয় আমাকে। উত্তাপ এমন ভাবে লুকাতে হয়, যেন সব কিছু ক্যাজুয়াল। তখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত হাসি হাসব আমি। মনে হবে মেলোড্রামা। অন্তত আমার কাছে।
ওর হাসিতে অবশ্য কোনও মাত্রা টানা থাকবে না ! আমি জানি ওর হাসি যেন জাপানি বসন্তে ঝরে পড়া চেরি ফুল। অবাধে অজস্র ঝরে ঝরে পড়ে। কখনও মনে হয় বাতাসে ভাসতে ভাসতে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো এক একটা আছড়ে পড়ছে পাড়ে। যতই শুনি অতিরঞ্জিত বা মেলোড্রামা মনে হয় না আমার। মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়। তবে কি এই হাসি সব সত্যি ! পঁচিশও কি পঁয়তাল্লিশকে নিয়ে কিছু ভাবছে ? ভাবতেও তো পারে ! ওরও কি তবে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বাড়ছে ?
তবে অনেকবার দেখেছি ওর হাসিকে সত্যি ভেবে ধরতে গেলেই মুঠো গলে পড়ে যায় বালির মতো, কিংবা ঠিক যেন সে সাবানের ফেনা। মুহূর্তে মাত্রা কমে তলানিটুকু পড়ে থাকে। আসলে ঠিক হাসিতে নয়, বাস্তবিক ওর চাহনিতে একটা মাত্রা টানা আছে দেখেছি। জ্বলতে জ্বলতে আপনা থেকেই নিভে যায়। বারুদ পোড়া বাজির মতো সেই চাহনি দেখে করুণা হয়, অস্বস্তি হয়। উৎসাহ দেওয়ার উৎসাহও থাকে না। আরও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে চাইলেও ওকে আসতে বলি। চলে গেলে ভাবি, ওটা কি ওর স্বভাবজাত, নাকি অনুশীলন ? নাকি কারও শেখানো সতর্কতা ?
সে যাইহোক, সকালে, দুপুরে এমনকি সন্ধ্যায় অনেকক্ষণ আমি আর বিশাখা ফোনে কথা বলব। প্রতিদিনই বলি, বলতে হয়। মুখোমুখি কথা বলার থেকে ইথার তরঙ্গে ভাসা কথা বোধহয় আমাদের দুজনেরই ভাল লাগে। আবেগের সঙ্গে ইথার তরঙ্গের মিশ্রণ কি ঘটে, বোধহয় ঘটে। কারণ তখন আমি যা যা ভুলে গেছি বা ভুলে যেতে পারি ও তা সব আমাকে মনে করিয়ে দেবে। আমি বোঝাব আমাদের আর কি কি ঠিক করতে হবে। মন দিয়ে শোনা ওর স্বভাব। শোনা শেষ হলে তবেই প্রশ্ন করে। ওর প্রশ্নের গভীরতা আমাকে বিস্মিত করে। তারপর উপযুক্ত পরামর্শ পেয়েছে মনে হলে আমার প্রশংসা চলবে আরও কিছুক্ষণ।
সৌমি বিছানায় শুয়ে শুয়েই আড় চোখে আমাকে দেখবে। কখনও বারান্দায় দাঁড়িয়ে, কখনও ওর পড়ার ঘর থেকেই আমাকে অবজার্ভ করবে। ফোনালাপ দীর্ঘ হলে ও ভ্রূ কোঁচকাবে, বার বার আমার দিকে তাকাবে। একপক্ষের কথা হয়তো ও কিছু শুনবে। কিছু বুঝবে, আবার কিছু বুঝবে না। আসলে ও-ও তো এখন আঠারো পেরিয়েছে। চেহারায় লম্বা হলেও স্বভাবে ঠিক ওর মায়ের মতো। মায়ের মতোই কি আমাকে সন্দেহ করবে ! নাকি বিশ্বাস আর সন্দেহ নিয়ে মনে মনে তর্ক করবে ! আসলে ভালোবাসা, বিশ্বাস নাকি সন্দেহ কে বেঁধে রাখে আমাদের ! কে জানে ! তবে এমনিতে ও যা ঘুমকাতুরে। কৌতূহল যতই থাক তখন ঘুম জড়িয়ে আসবে ওর চোখে। তবু ! ও কি সত্যিই তখনই ঘুমিয়ে পড়বে ?
তবে হ্যাঁ। পাঠক বিশেষ উদ্বিগ্ন হবেন না। এরও একটা আশ্চর্য সমাধান ছিল আমাদের পুরাণ-ইতিহাসে। গার্হস্থ্য-ব্রহ্মচর্য-বানপ্রস্থ-সন্ন্যাস ব্যাস; সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার অবসান। কামনার উত্তাপ নেই। বাসনার বিলাস নেই। মোহের নাগপাশ নেই। শুধু ত্যাগের আনন্দ আছে। আহা ! এ যুগেও যদি সে আনন্দ পাওয়া যেত !
না, সে বিমলানন্দের যুগ শেষ। তবে একদিন ছিল। যখন সব কিছুই ছিল প্রকৃতির। উদ্বেগ ছিল মানুষের নয়, দেবতার। কারণ তিনিই মালিক। আসলে মালিকানাই এই উদ্বেগের মূল। এযুগে মালিকানা হস্তান্তরিত হয়েছে মানুষের হাতে। আমি জানি বিশাখা এখন আমার অধীন। তাই ওকে নিয়ে আমার উদ্বেগ বাড়ছে।
অবশ্য উদ্বেগ শুধু ওকে নিয়েই নয়। যা কিছু আমার অধীন তার সব নিয়ে। জমিজমা, ঘরবাড়ি, টাকাকড়ি, গাড়ি, ব্যাঙ্ক, বিমা, শেয়ার আরও কত কিছু নিয়ে আমাদের চলতে হয়। এক দিক আঁকড়ে ধরলে অন্যদিক আলগা হয়ে যায়। তবে জমিজমা, বিষয়-আশয়, ঘরবাড়ির এযুগে সবার প্রয়োজন নেই। বাড়ি অপেক্ষা ফ্ল্যাটের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তবে টাকা, লিকুইড কিংবা ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স, এযুগে সকলের চাইই চাই। টাকা ছাড়া কারও কি কিছু চলে ?
আর কিছুই তো নেই প্রকৃতির হাতে। এখন নদীর জল, গাছের ফল সবকিছুই মালিকাধীন। তাই শুধু ডাবের জল নয়, তৃষার জল, এমনকি চোখের জলও বিক্রয়যোগ্য পণ্য। পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা আর কোথায় পাবেন। আরে বাবা পরের জন্য না হোক নিজের জন্য, স্ত্রী, সৌমি, বিশাখা সকলের জন্যই তো টাকা চাই ? আরও চাই। স্বার্থ চাই, ফাণ্ড চাই। ফাণ্ডের উত্তর উত্তর বৃদ্ধি চাই। অতএব সুযোগ বুঝে সরকারি ফাণ্ড থেকে তুলে বেসরকারি ফাণ্ডে, খাদের কিনারে রাখি। ঝুঁকি থাকলেও ঝুঁকি নিই। লাভ আছে, নিশ্চয়ই লাভ আছে। লসও আছে, যেমন থাকে। দোদুল্যমানতা সবেতেই আছে।
অর্থ একবার খোয়া গেলে ফিরে পাওয়া খুব কঠিন। এরকম যায়নি একবারও এমন মধ্যবিত্ত বড় একটা দেখিনি। সতত সতর্ক থেকে তবু কেউ যেন পড়ে গেছে খাদে। তাও সকলেই ভাবে, অবকাশ নেই জেনেও ভাবে। ভাবে ভাগ্যের চাকা ঘুরবেই চন্দ্র সূর্য যতদিন আছে। ঘুরে অবশ্য যায় কারও কারও। অতয়েব নানা পাত্রে টাকা ঢেলে উৎকণ্ঠায় থাকি।
আসলে শরীরের মতো আমাদের চারপাশেও বাজার বলে খুবই একটা জটিল ও রহস্যময় চক্র নিরন্তর আড়ালে আড়ালে কাজ করে চলে। দেহের রক্ত চাপের মতোই তার ওঠা-পড়া কখনও কখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। না, কোনো অলৌকিক শক্তি নয়। মানুষেরই হাতে কাটা খালে তার গতি। শুধু বারো ভুতের সংসার, জনসংখ্যার চাপ এইসব ভেবে আফসোস করে লাভ নেই। আমাদের প্রতিদিনের রোজগার হিসাবের গণাগুণতি কড়ি, নানা ভাবে সাবধানে রেখে তবু নিশ্চিন্তে কে পারে ঘুমাতে। তাছাড়া —
কারো রাতারাতি ধনী হওয়া মোটেই সততার ব্যাপার নয়। তবু তা দেখে ঈর্ষা করেনি এমন মানুষ আমি একটিও দেখিনি ! ভাবতে ভাবতে ঘোমাতে যাই। ঘুম কি আসে কিছুতেই ! তন্দ্রাচ্ছন্নতা আসে। তন্দ্রাচ্ছন্নতায় দেখি স্ত্রী, সৌমি, বিশাখার সঙ্গে আমার জমানো টাকার ককটেল এক দানবের চেহারা নিয়ে আমাকেই গিলতে আসছে। প্রাণপণে দৌড়চ্ছি আমি। দৌড়চ্ছি। দৌড়চ্ছি। দৌড়ছি। একসময় পালাবার পথ নেই দেখে ঘুরে দাঁড়াই। দেখি সে দানবের এক হাতে স্ত্রী আর এক হাতে বিশাখা। সৌমি ভয়ে ছুটে আসছে আমার দিকে। আমি হাত বাড়াতেই তন্দ্রাচ্ছন্নতা যায় ছুটে।