গত শতাব্দীর আটের দশক থেকে নিয়মিত কবিতা লেখার শুরু। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ ও একটি কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধ-গ্রন্থ। সম্পাদনা করেন ‘নীললোহিত’পত্রিকার। কবিতা ছাড়াও নিয়মিত লেখালেখি করেন ছোট গল্প ও উপন্যাস। পেয়েছেন সুকান্ত ভট্টাচার্য স্মৃতি পুরস্কার ও মিহির ঘরামী স্মৃতি পুরস্কার। এছাড়া ২০০০ সালে বাংলাদেশের রাইটার্স ফোরামের আহবানে সংবর্ধনা প্রাপ্তি।
জলের গভীরে
রাতের টুকরো শরীরে জড়িয়ে থমকে দাঁড়ালে
জলজ ঘাসের পাশে, বিপন্ন স্মৃতির থাবা
তোমাকে কাতর করে জনান্তিকে জল ছুয়ে গেল,
দূর থেকে দেয়াসিনী ভেবে আমি আমি কি পাগল হব,
শূন্য মাঠ বিলাপমুখর ছিল, গ্রহ-পতনের
শব্দ ছাড়া অন্য সব চুপ, নদীর মানুষ একা
উঠে এল তোমার সামনে, গাঢ়তম স্বর-বাক্য —
‘জলের গভীরে জল-শিশু খুব ভাল নেই আজ’
হৃদয়ের অপচয়ে ক্লান্ত তুমি ঈষৎ হাসিতে
কী বোঝালে অবুঝ নদীকে শান্ত হল ঘোলা জল
শীর্ষস্থানে ছিল না মুকুট, মাটিতে গড়াল প্রেম
জল-জিভ চেটে নিল নিকৃষ্ট জীবন আমাদের,
স্বভাব গতিতে বাধা পেলে জল কিছু প্রতিশোধ নেয়,
অসহায় জীবনের কোণে চুরি-ছ্যাঁচড়ামো দেখি,
প্রতারণা দেখি, তবুও তোমাকে দেখে মনে হয়
শুদ্ধতম জল, মরে যাই যেমন মরেছে নদী
মাটিকেই ভালোবেসে আহা, এই মৃত্যু পুনর্বার
তোমার গর্ভের জলে প্রাণ পাবে, আবার বাঁচব
শোক প্রস্তাব
ভঙ্গুর বর্ণমালা ছুঁয়ে দেখ, বদলে ফেলেছি শোকপ্রস্তাব
মেঘদের পিঠে চেপে খণ্ডিত বিদ্যুতের লতা দিয়ে
লিখে যাই অপাঠ্য দিনলিপি,
ব্যক্তিগত পাপের কাহিনী
পড়, গ্রীবা তুলে পড়ে যাও ব্যর্থতার কথা,
তরুণাস্থি কাঁপিয়ে গান গাও,
সব গান যেন মনে হয়, কান্নার বিকল্প ধ্বনি
কতটা কাঁদতে পারি দেখো
কান্নাহীন স্বরে